হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
সেবা ও আন্তরিকতায় ঘাটতি নেই প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, সেচ্ছাসেবী, নার্স ও সাংবাদিকদের…
সম্প্রতি খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার দীঘিনালা উপজেলা পরিষদ, কখনো হাসপাতাল ও থানার সামনে কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন একজন নারীকে সন্তান সম্ভাবনাময় দেখা যায়। এরমধ্যে একাধিকবার দীঘিনালা হাসপাতাল কতৃপক্ষ সেচ্ছায় চিকিৎসা সেবা দিয়েছে নারীটিকে।
পরবর্তীতে হঠাৎ হাসপাতালের সামনে নারীটিকে অসুস্থ অবস্থায় দেখা গেলে হাসপাতালের কয়েকজন নার্স তাকে হাসপাতালে নিয়ে বিভিন্নরকম পরীক্ষা করে জানতে পারে নারীটি পুরোপুরি সন্তান সম্ভাবনাময় অবস্থায় আছে। তাৎক্ষণিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও নার্সগণ মিলে সরকারি এ্যাম্বুলেন্স দিয়ে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে নার্সদের তত্বাবধানে নারীটি সিজারের মাধ্যমে একটি কন্যা সন্তান জন্মদেয়। দীঘিনালা হাসপাতালের কয়েকজন নার্স মিলে তাৎক্ষণিক আর্থিক সহযোগিতার করেন। পরবর্তীতে দীঘিনালা হাসপাতালে এনে সপ্তাহ খানেক রেখে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দিয়ে উপজেলা পরিষদের সামনে উন্মুক্ত বিশ্রামাগারে রাখা।
সেখানে এ ক’দিন হাসপাতালের সিনিয়র নার্স চম্পা আক্তার ও তার স্বামী আবদুল রাজ্জাক শিশুসহ নারীটিকে দেখাশোনা ও খোঁজখবর রাখেন, খাবারদাবার দেন। পরবর্তীতে আবদুল রাজ্জাকের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হলে উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসে বিষয়টি। তাৎক্ষণিক উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র সহ অনান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দেয়া হয়।
পরবর্তীতে মা ও নবজাতক শিশুটির কথা চিন্তা করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুনুর রশীদ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ আবুল হাসনাত খান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কাশেম, থানা (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুল হক, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. তনয় তালিকদার, স্থানীয় সাংবাদিক, সেচ্ছাসেবী ও জনপ্রতিনিধিরা সমন্বয় পূর্বক শিশুসহ নারীটিকে প্রশাসনের তত্বাবধানে আপতত একটি নিরাপদ স্থানে রাখা হয়।
বুধবার দুপুরে দেখা যায় থানা (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুল হক তার সঙ্গীয়দের নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতে শিশুসহ নারীটিকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে থাকার ব্যবস্থা করেন। এবং চিকিৎসা সেবা সহ যেকোনো রকমের সহযোগিতা ও খোঁজখবরের বিষয়ে তৎপর রয়েছে তারা।
এবং নারীটির পরিচয় ও ঠিকানা নিশ্চিত করে স্থানীয় হেডম্যান, ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় মেম্বারের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট একটি স্থানে নারীটির সাধারণ জীবনযাপন ও বসবাসের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় একটি বসতঘর করে দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন বলে জানায় উপজেলা প্রশাসন।