যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে সড়ক ও রেল যোগাযোগ সহজ হয়েছে। এ বন্দর দিয়ে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বাণিজ্য ও যাত্রী চলাচলও বেড়েছে বহুগুণ। কিন্তু বন্দরের পুরনো অবকাঠামোয় পণ্য পরিবহন বিঘ্নিত হচ্ছিল। তবে দুই দেশের বাণিজ্যে আরও গতি আনতে স্থলবন্দরে নির্মাণ করা হচ্ছে আধুনিক ট্রাক টার্মিনাল। পণ্য রাখার শেড ও ইয়ার্ডও বদলে যাচ্ছে।
এর আগে পুরনো টার্মিনালের পরিবর্তে নির্মিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বাস ও যাত্রী টার্মিনাল।
বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, নতুন নতুন অবকাঠামো নির্মাণে বেনাপোল বন্দরের সক্ষমতা আরও বাড়ছে।
দেশের সর্ববৃহৎ বেনাপোল স্থলবন্দরে ২শ’ ৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হচ্ছে বৃহত্তম ভেহিকেল ট্রাক টার্মিনাল। বন্দরের আধুনিকায়নে ২৪ একর জমির উপর টার্মিনালের নির্মাণ কাজ হাতে নেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শেষ হলে এখানে একসঙ্গে এক হাজার ২শ’ পণ্যবাহী ট্রাক দাঁড়াতে পারবে।
বেনাপোল স্থলবন্দরে অনুন্নত অবকাঠামোর কারণে রাজস্ব আয় এবং আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধিতে নানা প্রতিবন্ধকতা চলে আসছিল দীর্ঘদিন। বন্দরের চলমান বিভিন্ন উন্নয়ন দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য আরও সহজ করবে ও বদলে যাবে বেনাপোল স্থলবন্দরের চেহারা বলে আশা করছেন বন্দর সংশ্লিষ্টরা।
বেনাপোল স্থলবন্দর বর্তমানে ১২৭ একর জমির ওপরে নির্মিত। এখানে ৫০টি শেড ও ইয়ার্ড রয়েছে। এসব শেড ইয়ার্ডে পণ্য রাখার ধারণক্ষমতা মাত্র ৫০ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু ভারত থেকে প্রতিদিন যে পণ্য আমদানি হয় তার পরিমাণ দৈনিক প্রায় ৭ থেকে ৮ হাজার মেট্রিক টন।
বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে সরকারের বড় অংকের রাজস্ব ও বৈদেশিক মুদ্রা আসে। যা দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখছে। তবে বন্দরটি উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না থাকায় বাণিজ্য ও রাজস্ব দুটাতেই কাঙ্খিত অর্জন আসতোনা। তবে বর্তমান সরকার বেনাপোল বন্দরের গুরুত্ব অনুধাবন করে অবকাঠামো উন্নয়নে হাত দেয়। গেল ১৫ বছরে বন্দর আধুনিকায়নে সরকারি ও বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ব্যয় করা হয় ৬৮৫ কোটি টাকা।
উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ২শ’ ৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে কার্গো ভেহিক্যাল টার্মিনাল। ঢাকার এসএসআর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০২২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি একটি কার্গো ভেহিকেল ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শুরু করে। যেটির কাজ বর্তমানে চলমান রয়েছে। এটি নির্মাণ কাজ শেষ হলে একসঙ্গে ১২০০ ট্রাক পার্কিং করতে পারবে। ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪১ একর জমি অধিগ্রহণ, ১৯৩ কোটি টাকার আন্তর্জাতিক বাস ও প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল, ৩০ কোটি টাকার জায়গা অধিগ্রহণ, ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বন্দরের নিরাপত্তায় সিসি ক্যামেরা, ৩৯ কোটি টাকার সুউচ্চ বাউন্ডারী ওয়াল, ৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে স্টাফ ডরমিটোরি ভবন এবং ১ কোটি ৬২ লাখ টাকায় পণ্য পরিমাপের দুটি স্কেল।
এসব অবকাঠামো ও অটোমেশন সুবিধায় ইতিমধ্যে রাজস্ব ও আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে গতি বেড়েছে বন্দরে।
বন্দরের পরিসংখ্যান মতে, ২০১১-১২ অর্থবছরে বেনাপোল বন্দরে রাজস্ব আয়ের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা বেড়ে হয়েছে ৫ হাজার ৭৮৬ কোটি টাকা। একই সময়ে আমদানির পরিমাণ ১২ লাখ টন থেকে বেড়ে হয়েছে ২০ লাখ ৩৫ হাজার ৪৯৯ টন।
বন্দর ব্যবহারকারীরা বলেন, এসব কাজ শেষ হলে বন্দর আধুনিকতায় পূর্ণতা পাবে।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ এস এম সরোয়ার ,নির্বাহী সম্পাদক মোঃ আরিফ বিল্লাহ ,বার্তা সম্পাদক মোঃ শরিফুল ইসলাম
হেড অফিসঃ মাদারীপুর সদর মাদারীপুর।