1. sadhinbarta2024@gmail.com : admin :
  2. sadhinbarta202444s@gmail.com : স্বাধীন বার্তা ডেস্ক : স্বাধীন বার্তা ডেস্ক
ঝালকাঠি উপজেলা নির্বাচন সহিংস নির্বাচনী পরিবেশ , নিরাপত্তাহীনতায় চেয়ারম্যান প্রার্থী - স্বাধীন বার্তা - Sadhin Barta
২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ| ১৫ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ| বর্ষাকাল| শনিবার| সকাল ৭:৪৪|

ঝালকাঠি উপজেলা নির্বাচন সহিংস নির্বাচনী পরিবেশ , নিরাপত্তাহীনতায় চেয়ারম্যান প্রার্থী

রিপোর্টার নাম
  • আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, মে ১৬, ২০২৪,
  • 44 বার পড়া হয়েছে

উপজেলা নির্বাচনে সংসদ সদস্যরা (এমপি) প্রভাব বিস্তার বা হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না বলে জানিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এক সভায় তিনি বলেছিলেন , ‘আমি সংসদ সদস্য, আমি নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করব, আমার একজন থাকবে তাকে জেতানোর জন্য গোটা প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করব- এটা হতে পারবে না। যে উদ্দেশ্যে এই নির্বাচন উন্মুক্ত করা হয়েছে সেই উদ্দেশ্যটা কোনো অবস্থাতেই ব্যাহত করা যাবে না।’ আমরা দেখতে চাই এর মধ্য দিয়ে নির্বাচন কতটা প্রতিযোগিতামূলক, প্রতিদ্বন্ধিতামূলক হয়। নির্বাচনে যারা প্রার্থী হতে চায় হবে। আমরা একটা প্রভাবমুক্ত ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার নির্বাচন করতে চাই।’ আর এমন নির্দেশনা উপজেলা পর্যায়ে কঠোরভাবে বাস্তবায়নেও স্ব স্ব সংসদীয় আসনের এমপিদের জানিয়ে দেয়া হয়।

তবে আসন্ন ২১ মে দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ ঘিরে সেই নির্দেশনার ব্যত্যয় ঘটছে ঝালকাঠি জেলায়। এ জেলার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্থানীয় সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমুর বিরুদ্বে প্রভাব বিস্তার ও নির্বাচনী পরিবেশ ক্রমেই সহিংস হয়ে ওঠছে এমন অভিযোগ উঠেছে। এমন অভিযোগের ঘটনায় বুধবার দুপুরে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করেন ঝালকাঠি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দোয়াত কলম প্রতীকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সুলতান হোসেন খানের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী অধ্যক্ষ রাজা রফিকুল ইসলাম। একই দিনে শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থীর প্রধান সমন্বয়ক এ্যাড. রুহুল আলম রিজভী। এ সময় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ব্যারিষ্টার গোলাম শাহরিয়া উপস্থিত ছিলেন। উভয় সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান নির্বাচন কমিশনের প্রার্থীর পরিবার, সমর্থক ও নেতাকর্মীদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আবেদন জানানো হয়। পাশাপাশি নির্বাচনে স্থানীয় সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমুর প্রভাব বিস্তার বন্ধের দাবি জানানো হয়।

উভয় সংবাদ সম্মেলনে পুলিশসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা নিরব ভুমিকা পালন করেছে বলে অভিযোগ করা হয়। লিখিত বক্তব্যে প্রধান নির্বাচনী সমন্বয়কারী রাজা রফিকুল ইসলাম ও প্রধান সমন্বয়ক এ্যাড. রুহুল আলম রিজভী বলেন, মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর সুলতান হোসেন খানের সমর্থক ও নেতাকর্মীদের উপর স্থানীয় সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমুর ঘোষিত প্রার্থী খান আরিফুর রহমান ও তার অনুসারীরা বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেয়। সকল ঘটনায় বিভিন্ন সময়ে ডকুমেন্টসহ নির্বাচন কমিশন, রিটার্নিং কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারকে লিখিতভাবে এবং মৌখিকভাবে অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু কোন প্রতিকার পায়নি। সংবাদ সম্মেল করা দুইজন অভিযোগ করেন, প্রতিপক্ষরা হামলার পর বলছে এ তো শুধুই ট্রেইলার, আসল খেলা হবে নির্বাচনের দিন। এ অবস্থায় আমরা ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়ে শঙ্কিত তারা। তাই প্রধানমন্ত্রী ও নির্বাচন কমিশনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

তারা জানান, প্রার্থী সুলতান হোসেন খান গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সেইসাথে তার স্ত্রী-স্বজনরাও আতঙ্কে রয়েছেন। তাই নানা প্রতিকূলতার কারণে ঝালকাঠিতে সংবাদ সম্মেলন না করে বরিশালে করতে হয়েছে। আমরা চাই নির্বাচনী পরিবেশ বজায় থাকুক, সবার জন্য সমান সুযোগ প্রদানের মধ্য দিয়ে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হোক। সংবাদ সম্মেলনে রাজা রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন দলনিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। কিন্তু স্থানীয় সংসদ-সদস্য আমির হোসেন আমু, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহে আলম, সাধারণ সম্পাদক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খান সাইফুল্লাহ পনির সরাসরি নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করছেন। এমনকি আনারস প্রতীকের প্রার্থী আরিফুর রহমানের সমর্থক উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজ আল মাহমুদ, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক রেজাউল করিম জাকির, যুগ্ম আহ্বায়ক ও কাউন্সিলর কামাল শরীফ, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মধুর নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে আমাদের এলাকা ছাড়া করতে চাইছে। এদিকে হামলার ঘটনায় ভীতসন্ত্রস্ত্র হয়ে পড়েছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী সুলতান হোসেন খান । তিনি বলেন, আমি সহ আমার কর্মী সমর্থকদের ওপর হামলা করা হয়েছে। আমাকে বেধরক পিটিয়েছে স্থানীয় সংসদ আমির হোসেন আমুর স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

তিনি আমার প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী আনারস প্রতীকের আরিফুর রহমানকে সমর্থন দিয়ে এমন তান্ডব চালাচ্ছেন। আমার কর্মীরা ভীত হয়ে পড়েছে। আচরণ বিধি লঙ্গণ করছেন সাংসদ। আমি চাই সুষ্ঠু নির্বাচন। আমি এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সুদৃষ্টি কামনা করছি। জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ও ঝালকাঠি পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামাল শরীফ বলেন, মঙ্গলবারে সুলতান খানের লোকদের ওপর কোন হামলা হয়নি। এ বিষয়ে ঝালকাঠি পুলিশ সুপার মোঃ আফরুজুল হক টুটুল জানান, ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে থানায় মামলা হয়েছে। যারা জড়িত রয়েছে ভিডিও ফুটেজ দেখে ১০ জনকে ইতিমধ্যে আটক করা হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। শতভাগ লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকবে। আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। কোন অঘটন না ঘটে। প্রার্থী নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে এমন বিষয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনী নির্দেশনা অনুযায়ী যথাযথভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও সার্বিক শৃঙ্খলা বজায় থাকবে। বিষয়টি আমরা দেখছি। এ বিষয়ে রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহা. আ. ছালেক বলেন, যে প্রার্থী দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন তিনি একটি মামলা দিয়েছেন। মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে এবং অভিযান চলমান রেখে বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। মঙ্গলবারের ঘটনা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোও হয়েছে। আমরা যে নির্দেশনা পেয়েছি সে অনুযায়ী কাজ করছি। এছাড়া প্রার্থী বিভিন্ন সময়ে যে অভিযোগ দিয়েছেন অথবা বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা নির্বাচন সংশ্লিষ্ট অসংগতির যে কোনো বিষয়ে জানতে পেরেছি সেগুলোর ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছি। এ বিষয়ে জানতে প্রার্থী খান আরিফুর রহমানের মোবাইলে কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে জানতে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে স্থানীয় সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইলে বলেন, আমি তো ঢাকায় ছিলাম। সুতরাং এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে ঝালকাঠির কীর্তিপাশা মোড়ে সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এক পথসভায় চেয়ারম্যান প্রার্থী সুলতান হোসেন খানের ওপর হামলা এব্ং তার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।

এ ঘটনায় প্রার্থী সুলতান হোসেন খানসহ আহত হয়েছেন ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থীর প্রধান সমন্বয়ক এ্যাড. রুহুল আলম রিজভী, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ব্যারিষ্টার গোলাম শাহরিয়া সহ কমপক্ষে ২০ জন। তাদের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়। মঙ্গলবারের ঘটনায় সুলতান হোসেন খানের পক্ষ থেকে তার ছোট ভাই হেমায়েত উদ্দিন খান বাদী হয়ে মামলা করেন । মামলায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী খান আরিফুর রহমানসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৮০/৯০ জন আসামী করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরির আরো নিউজ
© All rights reserved © 2024 sadhinbarta.com